ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসের তিন শূন্য তত্ত্ব

ডাক্তার মুহাম্মদ ইউনুসের তিন শূন্য তত্ত্ব কি ?  যার কারণে পুরো বিশ্ব আলোচনা করতেছে ইউনুসের তিন শুন্য নিয়ে, কি আছে ইউনুসের তিন শূন্য তত্ত্ব আলোচনায় ?

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান,ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯ তম অধিবেশনে, ভাষন প্রদান কালে,বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবেলা ও বৈশ্বিক অর্থনীতি সুসংহত করনের লক্ষ্যে, সমগ্র বিশ্ববাসীকে নিজের উদ্ভাবিত  ৩ শুণ্য লক্ষ অর্জনের ব্যাপারে জোরারোপ করেন। তিনি বলেন :

আমি বিশ্বাস করি সমগ্র বিশ্ব একসাথে তিন শূন্যের লক্ষ্য অর্জনের ধারণা বিবেচনা করে দেখতে পারে”

ইউনুসের তিন শূন্য তত্ত্ব
ইউনুসের তিন শূন্য তত্ত্ব

 কিন্তু কি এই ৩ শূণ্য তত্ত্ব??

 কেনই বা বিশ্বকে এটি বাস্তবায়নের উপর জোর দিতে বলেন ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস?? 

 

৩ শূণ্য তত্ত্ব : ২৮ মে ২০১৫ সালে, বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র, বিআইসির  ষষ্ঠতম  সামাজিক দিবস উপলক্ষে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আগত,গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে, ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস প্রথম তার এই ৩ শুণ্য তত্ত্ব বিশ্ববাসীর সামনে  তুলে ধরেন।

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস তার :

এ ওয়ার্ল্ড অফ ত্রি জিরোজ :দা ইকোনমিক্স অফ জিরো প্রভার্টি, জিরো আনএমপ্লয়মেন্ট, এন্ড জিরো কার্বন অ্যামিশনস”

বইয়ে, তার এই তত্ত্বের ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন। 

শুধুমাত্র তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করলেই,পৃথিবীতে বিদ্যমান বেশিরভাগ সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

এই তিনটি বিষয়কে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে পারলেই টেকসই উন্নত পৃথিবীর বাস্তবায়ন সম্ভব।

 

১)শুন্য দারিদ্র্য। 

২)শুণ্য বেকারত্ব। 

৩)শুণ্য কার্বন নিঃসরণ। 

 

এই ৩ শূন্য  অর্জনের জন্য, চারটি জিনিসের প্রয়োজন বলে তিনি জানান :

১)তারুণ্য। 

২)সুশাসন।

৩)প্রযুক্তি। 

৪)ও সামাজিক ব্যবসা।

 

দারিদ্রতা থেকেই সকল সমস্যা সৃষ্টি হয়।এ ব্যাপারে ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস এর অভিমত:

 

“বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিজে দারিদ্র  সৃষ্টি করে, এবং এই অবস্থার অধীনে, দারিদ্র দূর করা সম্ভব নয়। মানুষ এককভাবে দারিদ্র তৈরি করে না। আমাদের অর্থনৈতিক অবকাঠামের ভেতরেই তৈরি হয় দারিদ্র”

 

সেজন্য দারিদ্রকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে পারলেই, বেশিরভাগ সমস্যারই সমাধান সম্ভব। 

ডাক্তার মুহাম্মদ ইউনুসের তিন শূন্য তত্ত্ব আলোচনার কি উদ্দেশ্য

দারিদ্র দূরীকরণে,বেকারত্বের অভিশাপ থেকে পৃথিবীতে মুক্ত করতে হবে,সেজন্য সবার আগে তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে, এ ব্যাপারে তিনি বলেন :

“প্রত্যেক তরুণ তরুণীকে চাকরিপ্রার্থী না হয়ে বরং উদ্যোক্তা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে”

ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের মতে, চাকরি হচ্ছে আধুনিক দাসত্ব। তারুণ্যের প্রতি তিনি আহ্বান করেন, 

 

“তারা যেন সম্পদের সীমাবদ্ধ থাকা সত্ত্বেও, নিজ নিজ সৃজনশীলতার  বিকাশ করতে পারে”

 

তিনি আরো বলেন :

আমরা জন্মেছি সমস্যা সমাধানের জন্য।কারো অধীনে চাকরি করার জন্য নয়। তাই তরুণ প্রজন্মকে উদ্যোক্তা হতে হবে।কারো অধীনে নয়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে।”

 

তারুণ্যকে সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে, ভোগবাদী জীবনধারা থেকে উত্তরণ করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করার কথা বলেন।

 

এছাড়া বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন,বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম সমস্যা,বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি,প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানব সভ্যতার জন্য হুমকি স্বরুপ।

বিশেষত বাংলাদেশের মতো সমুদ্র উপকূলবর্তী দেশগুলো, সব থেকে বেশি বিপদজনক অবস্থায় আছে। 

 

জাতিসংঘের ৭৯ তম সাধারণ পরিষদের  অধিবেশনে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকে :

“বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোতে অভিযোজনের জন্য ব্যাপক বিনিয়োগের আহ্বান জানান” 

 

এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য,এ সমস্যার পেছনের মূল যে কারন,অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ এর নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। 

 

এটিকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে এনে,কার্বন মুক্ত একটি পৃথিবী গড়তে পারলেই ,একামত্র বিদ্যমান জলবায়ু গত সমস্যার সমাধান সম্ভব। 

 

বাংলাদেশের বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকার প্রধান, ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস,নিজের উদ্ভাবিত  ৩ শুণ্য তত্ত্ব বাস্তবায়নের মাধ্যমে, বাংলাদেশকে একটি টেকসই ও উন্নত দেশে হবে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে, এটা আমাদের সকলের কামনা। 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *