“স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন”
প্রচলিত এই প্রবাদ বাক্যটি যেন বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকেই ইঙ্গিত করছে।
স্বৈরাচারী শাসনের বদ্ধ শেকল থেকে মুক্ত, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের,দায়িত্ব নেন ৮৪ বছর বয়সী (Muhammad yunus age) ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকার। বন্যা মোকাবেলায় সরকার এর অবদান।
নতুন এক বাংলাদেশ বিনির্মাণের যাত্রা শুরু করতেই,উন্মোচন হয়,সদ্য বিদায় নেয়া স্বৈরাচার সরকারের, সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি, ও লুটপাট এর ফলস্বরুপ,অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ভঙ্গুর, কঙ্কালসার এক বাংলাদেশের চিত্র।
বিদ্যমান সকল বাধা বিপত্তিকে পেছনে ফেলে,দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে শপথ গ্রহণ করে অন্তবর্তী কালীন সরকার।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলা
এরই মাঝে দেশের পূর্বাঞ্চল সাক্ষী হয় স্মরণকালের ঘটে যাওয়া, সবচেয়ে ভয়ংকর বন্যা পরিস্থিতির।
দেশের ১১ টি জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়।গৃহহীন ও পানি বন্দী হয় প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ।
এরকম দুর্যোগ মোকাবেলা, নব্যগঠিত সরকারের জন্য অনেক বড় চেলেঞ্জ।
বন্যা প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও বন্যা মোকাবেলায় সরকার
দেশের মানুষের স্বার্থে, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়, ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস সরকার, কোন কালক্ষেপণ না করেই,নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
বন্যা শুরুর সাথে সাথে সরকার, বাংলাদেশ যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে বন্যা দুর্গত এলাকায়,উদ্ধার কাজ ও ত্রান বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে।
বন্যার্তদের জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশ
একই সাথে দেশবাসী এবং সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বন্যা মোকাবেলায় সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানান।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রতিনিধির সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি জানান:
“বন্যা মোকাবেলায় সরকার এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে, আমাদের অবশ্যই এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। সবাই মিলে এ দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে”
তিনি আরো বলেন:
“কেবল বন্যা মোকাবেলায় সরকার গুরুত্ব দিলে হবে না কিভাবে দেশকে বন্যা মুক্ত রাখা যায় সেদিকে মনোযোগী হতে হবে”
বন্যা কবলিত মানুষের সাহায্যের জন্য
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায়, ১০০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেয় সরকার।
সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার অধীন” উপদেষ্টা কল্যান ও ত্রান তহবিলের একাউন্টে” অনুদান গ্রহনের ব্যবস্থা করা হয়।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ প্রতিবেদন
এছাড়া সরকারি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা সংস্থা নগদে,সরকার কর্তৃক চালু করা মার্চেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে অনুদান গ্রহণের ব্যবস্থা চালু করা হয়।
সরকারের এই মহৎ উদ্যোগে সাড়া দেয় দেশ-বিদেশের সরকারি ও বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান।
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ২২ কোটি টাকা সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতন ১ কোটি,সর্বমোট ২৩ কোটি টাকা অনুদান দেয় বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মোবাইলও আর্থিক সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ৫০ লক্ষ টাকার অনুদান দেয় প্রধান উপদেষ্টা ত্রান তহবিলে।
বন্যার্তদের সহায়তায় ১ কোটি টাকার অনুদান দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় ২০ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান দেয় চীন।এছাড়া চীনা রেড ক্রসের বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ১ লাখ মার্কিন ডলারের মানবিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেয়,চীনা রাষ্ট্রদূত।
অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা ১০ কোটি টাকা অনুদান দেয় বন্যার্তদের সহায়তা ও পূর্ণবাসনের জন্য।
বন্য পরবর্তী সমস্যা সমাধান ও পূর্ণবাসন নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস:
“বন্যার পানি নামার পরবর্তী যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয় বিশেষ করে পানি বাহিত রোগ, স্বাস্থ্যঝুঁকি খাদ্য ও পূর্ণবাসন ব্যবস্থায় সম্মানিত উদ্যোগে কিভাবে কাজ করা যায়, তা দেখতে হবে”
বাংলাদেশের প্রতিবছর হওয়া বন্যা সমস্যার দীর্ঘস্থায়ি সমাধানে, ভারতের সাথে পানি বন্টন চুক্তি নিয়ে চলমান সমস্যার সমাধানের ও ইঙ্গিত দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সম্প্রতি ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই কে দেওয়া সাক্ষাৎকালে তিনি জানান:
“আমাদের আন্তর্জাতিক নিয়ম নীতি মেনে,এ বিষয়ের সমাধান করতে হবে,ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট কিছু অধিকার রয়েছে,এবং আমরা সেই অধিকার চাই”
মাওলানা ভাসানীর পরে, বাংলাদেশের সরকার পর্যায়ের কোন ব্যক্তিকে ভারতের পানি বন্টন চুক্তি সমস্যা সমাধানে, এমন স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে দেখা যায়নি।
বন্যা শুরুর প্রাথমিক পর্যায়ে, বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষদের উদ্ধার,ও প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সকল কার্যক্রম, সরকার ইতিমধ্যে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।
কিন্তু এই দুর্যোগ ব্যবস্থার সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ,বন্য পরবর্তী পূর্ণবাসন প্রকল্প এখনো সামনে।
সরকার কি পারবে এ সমস্যা সমাধানের আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে? এটাই দেখার বিষয়।
বন্যা হওয়ার কারণ
বন্যা সম্পর্কে তথ্য
বাংলাদেশের বন্যা
বন্যা মোকাবেলায় করণীয়
বন্যা প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন
বন্যা প্রতিরোধের তিনটি উপায়
বন্যা প্রজেক্ট
বন্যা সম্পর্কে প্রতিবেদন |