ডাক্তার মৌমিতা দেবনাথের গবেষণার প্রধান লক্ষ্য হল নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি এবং রোগ প্রতিরোধের কৌশল উন্নয়ন করা।তাঁর কাজের জন্য তিনি বহু পুরস্কার ও স্বীকৃতি লাভ করেছেন।
৯ আগস্ট ২০২৪,পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী, কলকাতার অন্যতম প্রাচীন ও স্বনামধন্য মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, (RG KAR medical college) রাধা গোবিন্দ কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সেমিনার কক্ষ থেকে উদ্ধার হয় অর্ধনগ্ন ক্ষতবিক্ষত এক তরুনীর লাশ।
কিন্তু কে এই তরুনী??কেনোই বা তার এই ভয়াবহ পরিনতি??
ডাক্তার মোমিতা দেবনাথ এর পরিচয়
জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে ঘটনার আগের দিনের সেই ভয়াবহ রাতে।
৩১ বছর বয়সী পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনি ডাক্তার মৌমিতা দেবনাথ। টানা ৩০ ঘন্টা অন-কল ডিউটি শেষে বিশ্রাম নিতে যায় সেমিনার হলে।সেখানে সে সাক্ষী হয় তার জীবনের সবথেকে বিভীষিকাময় রাতের।
সারা শরীরে অসংখ্য ক্ষত এর চিহ্ন, ১১৩ টা কামর এর দাগ,ভাঙা গলার অস্থি, রক্তাক্ত পা, গভীর ক্ষত যৌনাঙ্গ ও রক্তাক্ত চোখ।
পোস্টমর্টেম এ উঠে আসা এই প্রতিবেদন প্রমাণ করে যে, কি নির্মম, কি পাশবিক অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছিলো মৌমিতাকে সেই রাতে। ধর্ষণের পরে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় তাকে।
মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রথমে এটাকে আত্মহত্যা হিসেবে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও,সারা দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে, শেষমেষ এটিকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড বলে মেনে নেয়।
ইতিমধ্যেই সঞ্জয় রায় নামে একজন কে পুলিশ গ্রেফতার করলেও,এখনো এই নৃশংস হত্যাকান্ড নিয়ে জনমনে রয়েছে অনেক ধোয়াশা।
কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন প্রথমে এটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করলো?
এত বড় একটি মেডিকেল কলেজের সেমিনার হলের সিসি টিভির ফুটেজ কোথায়??
একা, একজন মানুষের পক্ষে কি এই রকম অমানবিক নির্যাতন করা সম্ভব??
এমনও হাজারো প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে সকলের মনে।
ডাক্তার মোমিতা দেবনাথ এর পরিচয়
একজন পোস্ট গ্রাজুয়েট শিক্ষানবিশ ডাক্তার হিসেবে, মৌমিতা নিশ্চয় অসংখ্য পোস্টমর্টেম এর সাক্ষী হয়েছে জীবনে।
সে কি কোনদিন কল্পনা করেছিল? একদিন তার ক্ষত-বিক্ষত প্রাণহীন নগ্ন দেহটা ও পোস্টমর্টেম টেবিলে পড়ে থাকবে।
জন্মালে মৃত্যু অবধারিত। কিন্তু তাই বলে এমন মৃত্যু কে চাই?
একটা মানুষ কতটা শারীরিক যন্ত্রণার শিকার হলে,চোখ দিয়ে ঝরে রক্তের স্রোত।
যেখানে মৌমিতার চিকিৎসায়,নবজীবন লাভ করত কত শত মুমূর্ষ আবাল বৃদ্ধ বনিতা অসহায়।
সেখান থেকে মিললো তার আজ কান্ডজ্ঞানহীন মানুষের পরিচয়।
শুনতে অবাক লাগছে তাই না?? কিন্তু এটাই ঘটেছে মৌমিতার সাথে।
আর জি কর মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ দাবি করেন :
“রাতের বেলা একা একা সেমিনার হলে গিয়ে মেয়েটির দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ করেছে”
মৌমিতা দেবনাথের ঘটনা ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট
আচ্ছা যেখানে রয়েছে তার সর্বোত্ত পদাচরণ, প্রতিদিন আনাগোনা,সকলেই জানা শোনা।৩৬ ঘন্টা টানা ডিউটি শেষে, একটু নির্জন জায়গায় বিশ্রাম নিতে যাওয়া কি অপরাধ??
নাকি সারাদিনের ব্যস্ততার শেষে, নির্জন রাত আর ক্লান্ত নারী মানেই, শুধু কাম লালসা চরিতার্থের ভোগ পণ্য।
মৌমিতার দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা?
না কিছু মানুষরূপী পশুর বিকৃত মানসিকতা? ও নারীর নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ সমাজ ও রাষ্ট্রের অপারগতা,
কোনটি মৌমিতা এর এই ভয়াবহ অবস্থার জন্য দায়ী??