দেশের সর্বস্তরের মানুষ,এই প্রাণঘাতী দুর্যোগ মোকাবেলায় এগিয়ে আসলেও, সবচেয়ে বেশি আলোচনায় উঠে এসেছে, শায়খ আহমাদুল্লাহ এর আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
দেশের অনেকেই এটিকে শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় প্রচার ও প্রসার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান হিসেবে জেনে থাকলেও।
এটি যে পূর্ণত মানব কল্যাণে নিবেদিত সেবামূলক গণ মানুষের একটি প্রতিষ্ঠান,তা এখন আর বাংলাদেশের কারোই অজানা নয়।
কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ, ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানির ঢলে, দেশের পূর্বাঞ্চল ও পূর্ব -দক্ষিণাঞ্চল ভয়াবহ বন্যার সাক্ষী হয়।
আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর মালিক কে?
“উম্মার স্বার্থে, সুন্নাহর সাথে”
আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর গঠনতন্ত্র
তাদের এই স্লোগানকে সামনে রেখে, এবারের বন্যায়ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, তাদের সহযোগিতা ও মানবতার হাত প্রসারিত করেছে।
বন্যার দিন (২১ আগস্ট), আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ,নিজের ৫.২ মিলিয়ন অনুসারীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে,পরের দিন থেকেই ফেনীতে ত্রাণ কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন।
এবং পর্যায়ক্রমে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে ত্রান কার্যক্রম পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দেন।
বন্যার্তদের সহযোগিতায়, তাদের এই ত্রান ও পূর্ণবাসন কার্যক্রম প্রকল্পে অফলাইন ব্যাংকিং বা মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ/নগদ) এর মাধ্যমে,যে কেউ, যে কোনো পরিমাণ অনুদান পাঠিয়ে, এই মহৎ কার্যক্রমে শরিক হওয়ারও সুযোগ করে দেয় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ব্যবস্থা প্রতিবেদন
প্রথম দিন ত্রান সামগ্রী প্যাকেজিং, ও বিতরণের কাজের সহযোগিতার জন্য, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বান করা হলে, যুবক থেকে বৃদ্ধ, হাজারো মানুষের উপস্থিতি, আস-সুন্নাহ এর প্রতি মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
সর্বসাধারণের কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের এক অনন্য নাম আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
ত্রান তহবিল সংগ্রহের প্রথম দিনেই, মাত্র ২৪ ঘন্টায় ২০ কোটির ও বেশি টাকা সংগ্রহ করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
১০ দিনে এই টাকা সংগ্রহের পরিমাণ, ১০০ কোটি ছারিয়ে যায়,যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা।
সবচেয়ে বড় একক অনুদানের পরিমাণ ২০ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা।
মোবাইল ব্যাংকিং, ওয়েবসাইট এবং অফলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এই অনুদানের ট্রানজেকশন এর সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ। অর্থাৎ লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সহযোগিতায় এত বড় অংকের বন্যা তহবিল গঠিত হয়েছে।
দাতাদের এই বিশাল সংখ্যাই প্রমাণ করে যে,আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর মূল শক্তি কারা।
আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন নিয়োগ ২০২৪
আসস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রাণ ও পূর্ণবাসন তহবিলে অনুদান প্রদান এর শেষ সময় ৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত নির্ধারণ করলেও।দেশ বিদেশের বিভিন্ন শুভাকাঙ্ক্ষী ও প্রতিষ্ঠানের অনুরোধে, অনুদান প্রদানের সময়সীমা, ৫ই সেপ্টেম্বর,রোজ বৃহস্পতিবার ১১.৫৯ পর্যন্ত বর্ধিত করে।
ইতিমধ্যে বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ ও পূর্ণবাসন প্রকল্পের প্রথম ধাপে, খাদ্য ও প্রয়োজনীয় নানা ত্রাণসামগ্রী ক্রয়ের কাজ,এবং অর্ধেক এর বেশি বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
৪২৯০.৫ টন খাদ্যদ্রব্য, পানীয় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রিক ক্রয় বাবদ ৩১ কোটি ৬১ লক্ষ ৬১ হাজার ২২৫ টাকা খরচ করেছে ফাউন্ডেশনটি।যার একটি খসড়া হিসাব,ইতিমধ্যেই তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে, শেয়ার করেছে তারা।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো এই যে,হাজার হাজার মানুষের সমন্বয়ে পরিচালিত, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের এই ত্রাণ কার্যক্রম প্রকল্পে,ব্যবস্থাপনা খরচ হয়েছে, মোট খরচের ১% এরও কম,যেখানে অন্যান্য চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রসেসিং খরচ পড়ে ২০-২৫% বা তারও বেশি।
সেবামূলক কাজের ইতিহাসে,যা এক বিরল দৃষ্টান্ত।
as sunnah foundation
কিভাবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এটি সম্ভব করেছে,
তারই প্রমাণ পাওয়া যায়, শায়খ আহমাদুল্লাহ ও মাহমুদুল হাসান সোহাগের, সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়া একটা ছবি দেখে।
যেখানে তাদেরকে,আরামদায়ক কোন এসি গাড়িতে না চড়ে,ত্রাণ বাহি ট্রাকে করে যাতায়াত করতে দেখা যায়।যা সর্বসাধারণের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।
ত্রান বিতরণ পরবর্তী, পূর্ণবাসন প্রকল্পে তহবিলের টাকা ব্যয় হবে কয়েকটি ধাপে,সাংবাদিকদের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
★কৃষি ও ব্যবসা পূর্ণবাসনের জন্য ৩০ কোটি টাকা খরচের পরিকল্পনা আছে এ ফাউন্ডেশনের।
★গৃহহীনের পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দ আছে ৩০ কোটি টাকা।
★বন্যা আক্রান্ত অঞ্চলে, শিক্ষা খাতের উন্নয়নে বরাদ্দ ২০ কোটি টাকা।
এছাড়া খাল খনন এর মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা, নদীকে দখলদার মুক্ত করা প্রভৃতি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে, বন্যা দুর্গতি কমানোর লক্ষ্যে নানাবিধ কাজে, সরকারের পাশাপাশি, জনবল ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
দেশের এই ভয়াবহ দুর্যোগের সময়,বন্যার্তদের সহায়তায় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্প বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ এর আস-সুন্নহ ফাউন্ডেশন এখন শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বরং দেশের যে কোন পরিস্থিতিতে অপমার জনসাধারণের কল্যাণে নিবেদিত গণ মানুষের প্রতিষ্ঠান। আপনার কি মতামত???