দেউলিয়া ব্যাংক তালিকা, একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অনেকাংশেই নির্ভর করে,সেই দেশের ব্যাংকিং খাতের উন্নতি,সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের উপর।
ব্যাংকিং ব্যবস্থা একটি দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। কেননা ব্যাংকেকে কেন্দ্র করেই দেশের সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে।
দেউলিয়া হওয়ার পথে কোন ১০ ব্যাংক
অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই,সাধারন মানুষের সামনে আসতে থাকে, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের প্রায় দেড় দশক ক্ষমতায় থাকাকালীন, সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটতরাজ এর ফলে সৃষ্ট বাংলাদেশের ভঙ্গুর অর্থনৈতিক দুর্দশার চিত্র।
কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংবাদ মাধ্যম কর্মীদের সাথে সাক্ষাৎকালে, বাংলাদেশের বর্তমান ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার এক ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরেন, সবার সামনে।গভর্নর বলেন :
“ আমরা আশা করি না, কোন ব্যাংক দেউলিয়া হবে, তবে এটাও ঠিক অনেক ব্যাংক দেউলিয়া আছে।”
কোন ব্যাংকের নাম প্রকাশ না করলেও, প্রায় ১০ টির মতো দেউলিয়া ব্যাংক তালিকা পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।
ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকের তালিকা ২০২৪
বিগত সরকার পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল প্রভৃতি মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের নামে, বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বারবার দাবি করলেও।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, বিশেষত ব্যাংকিং খাত এর যে করুন দশা,তার সুস্পষ্ট চিত্র উঠে আসে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বছরের “ব্যাংক হেলথ ইন্ডেক্স অ্যান্ড হিট ম্যাপ” শীর্ষক এক প্রতিবেদনে।
অনিয়ম, ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি,বাংলাদেশ ব্যাংকের স্থবরিতা,ও পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বহীনতা এর ফলে ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্যের দিন দিন যে অবনতি হয়েছে, যার ফলে ১ ০ টির মতো দেউলিয়া ব্যাংক তালিকা বের হইছে তারই প্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলোকে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়।
দেশের ভালো ব্যাংকগুলোকে গ্রিন জোনে রাখা হয়,যার সংখ্যা মাত্র ১৬ টি।
মোটামুটি অবস্থা সম্পূর্ণ ব্যাংকগুলোতে রাখা হয় ইয়োলো জোনে।এই জোনের অন্তর্ভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা ২৯ টি।
খুবই খারাপ অবস্থায় সম্পূর্ণ ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ১২ টি ব্যাংকে,যার মধ্যে ৯ টি ব্যাংক ইতিমধ্যে রেড জোনে চলে গেছে বলে জানা যায়, বাকি ৩ টি ব্যাংক রেড জোনের কাছাকাছি থাকায়, ইয়োলো জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ইয়েলো ব্যাংক লিস্ট ইন বাংলাদেশ
তখন রেড জোনে থাকা এই ব্যাংকগুলোকে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের, দেশের প্রায় ১০ টি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে , এই বক্তব্যের পর, সাধারণ মানুষের মাঝে নানা দুশ্চিন্তার উদ্রেগ হয়।
ব্যাংকের নাম প্রকাশ না করলেও, দেওলিয়া হওয়া এই দশটি ব্যাংকের মধ্যে সাতটি ব্যাংকের ব্যাপারে মোটামুটি সবাই নিশ্চিত।এই সাতটি হলো এস আলম গ্রুপ কর্তৃক অধিকৃত ব্যাংক সমূহ।
ব্যাংক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন
যেমন:
১)ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
২)ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
৩)আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
৪)বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড
৫)ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড
৬)গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এবং
৭)সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।
এই সব ব্যাংক থেকে এস.আলাম গ্রুপ, নামে বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে ও বিদেশে পাচার করেছে।সরকারি ইতিমধ্যে এসব ব্যাংকগুলোকে এস আলম গ্রুপ মুক্ত করেছে।
দেওলিয়া হওয়া, বাকি তিনটি ব্যাংকের মধ্যে দুইটি ব্যাংকের নাম উঠে এসেছে :
১)ন্যাশনাল ব্যাংক ও
২)পদ্মা ব্যাংক
এরই মধ্যে আর্থিক ঝুঁকি থাকায়, এই নয়টি ব্যাংকের সাথে, সব রকম লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সাধারণ আমানতকারীদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে জানান।ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধি, ও আশ্বাস প্রদানে বলেন :
“আমানত ইন্সুরেন্স এক লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লক্ষ টাকা করা হয়েছে। ব্যাংক খাতের ৯৫ শতাংশ গ্রাহকের স্বার্থ নিশ্চিত হবে। বিশ্বের কোন দেশই ব্যাংকিং খাতের আমানতের ১০০ ভাগ গ্যারান্টি দেয় না। আমারও ৯৫ শতাংশ গ্যারান্টি দিচ্ছি।”
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা
ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের অভাব, পরিবারভিত্তিক ব্যাংকিং পরিচালনা পর্ষদ,দুর্নীতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব এর ফলে দেশের ব্যাংকগুলো আজ যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সঠিক ব্যবস্থাপনা,সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দিক নির্দেশনার মাধ্যমে, এ সকল সমস্যার আশু প্রতিকার হোক,এটাই আমাদের সকলের চাওয়া।
কেননা এই ব্যাংকগুলোর সাথে হাজারো নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের, ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা ও হাজারো স্বপ্ন জড়িয়ে আছে।
দেউলিয়া ১০ ব্যাংক তালিকা
দেউলিয়া হওয়ার পথে কোন ১০ ব্যাংক
দেউলিয়া ১০ ব্যাংকের নাম
দেউলিয়া ব্যাংক তালিকা ২০২৪ নাম
দুর্বল ১০ ব্যাংকের তালিকা
দুর্বল ১১ টি ব্যাংক