Baitul Mukarram News, বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলন কে কেন্দ্র করে, সাধারণ ছাত্র জনতার উপরে, সরকারি বাহিনীর সহিংসতা, জন্ম দেয় গণঅভ্যুত্থানের।পতন হয় স্বৈরাচার সরকারের,অভ্যুদ্বয় হয় নতুন এক বাংলাদেশের।
কিন্তু সহিংসতা যেন বাংলাদেশের পিছুই ছাড়ছে না।প্রতিদিনই কোন না কোন সহিংসতার খবরে ভারী হয়ে ওঠে পত্রিকার পাতা।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সকল সহিংসতাকেই ছাড়িয়ে গেছে, আজকে বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এ জুমার নামাজের আগে ঘটে যাওয়া দুই খতিবের অনুসারীদের মধ্যকার হাতাহাতি ও ভাঙচুরের ঘটনা।
Baitul mukarram clash
বাংলাদেশের ধর্ম প্রাণ মুসলমানদের আবেগ ও শ্রদ্ধার জায়গা, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে,পবিত্র জুম্মার দিনে, শুধুমাত্র নামাজ পড়ানো কে কেন্দ্র করে, দুই খতিবের মধ্যকার এই সহিংসতা প্রমান করে যে,বাংলাদেশের কোন স্থানই এখন সহিংসতার উর্ধ্বে নয়।
বিগত সরকার, দেশের প্রতিটা সেক্টর কেই,দলীয়করণ ও রাজনৈতিক আওতাভুক্ত করে।মুসলমানদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ও এর বাইরে জাইনি।
৫ ই আগস্ট, শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার সাথে সাথেই,আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মী ও সুবিধা ভোগীদের, দেশত্যাগ ও গা ঢাকা দিতে দেখা যায়।
কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন ও আত্মগোপনে চলে যান।
যেটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
পরবর্তীতে জানা যায়, মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন, সরকারের দলীয়ভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত খতিব।তার বাসা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার গহরডাঙ্গা গ্রাম। যার জন্য আসলে তার এই আত্মগোপনে চলে যাওয়া।
২০১৮ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক বক্তৃতায়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে “কওমি জননী”
উপাধি দেওয়ায়, ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন তিনি।
এছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নড়াইল ১ আসন থেকে,আওয়ামী লীগের মনোনীত হয়ে নির্বাচন করার প্রত্যাশা করেন।
যারই ফলশ্রুতিতে ২০২২ সালে তাকে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
কোন কারণ দর্শানো ব্যতীত, মাওলানা মুফতি রহুল আমিনের অনুপস্থিতির ফলে, ইসলামিক ফাউন্ডেশন মুহাদ্দিস ড. ওয়ালীয়ুর রহমান কে সাময়িকভাবে খতিব হিসেবে দায়িত্ব দেন।
Baitul mukarram today news
সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছিল কিন্তু ২০ সেপ্টেম্বর, পবিত্র জুমার নামাজের আগে,ড. ওয়ালীয়ুর রহমান যখন মিমবারে বসে খুতবা দিচ্ছিলেন।
এ সময় দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন,বয়ানরত খতিবের কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন, এবং নিজে নামাজ পড়াবেন বলে জানান।
baitul mukarram khatib ruhul amin
এ সময় উপস্থিত এক দল মুসল্লিরা,এতে অস্বীকৃতি জানান এবং মুফতি রুহুল আমিন কে জুমার নামাজের ইমামতি না করার অনুরোধ করেন।
এ সময় মুফতি রুহুল আমিনের অনুসারীরা এর প্রতিবাদ জানান।
এক সময় দুই পক্ষের বাকবিতণ্ডা রুপ নেয় হাতাহাতিতে।উপস্থিত অন্যান্য মুসল্লিরাও দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায় এবং একে অপরের দিকে প্রথমে স্যান্ডেল ও পরবর্তীতে জুতার বাক্স ছুড়ে মারতে দেখা যায়। এতে দুই পক্ষেরই অনেকেই হতাহত হয়। সহিংসতায় লিপ্ত মুসল্লিদের মসজিদের দরজা জানালার কাচ ভাঙছে দেখা যায়।
পরবর্তীতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে,অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে,ও বর্তমান খতিবের ইমামতিতে জুমার নামাজ সম্পন্ন হয়।
খতিবদের মধ্যকার এই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে,মসজিদের অভ্যন্তরীণ সহিংসতার ভিডিও, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে,দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বাইতুল মোকাররম এরিয়া তে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনগুলোর মিছিল, মিটিং সহিংসতা নতুন কিছু নয়।
কিন্তু মসজিদের মধ্যে সহিংসতা ও ভাঙচুর,বাইতুল মোকাররম মসজিদের ইতিহাসে এটাই প্রথম।
রাজপথ থেকে শিক্ষাঙ্গন, মসজিদ থেকে মন্দির সবকিছুই হচ্ছে সহিংসতার শিকার।
তাহলে কোথায় স্বাধীন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার অধিকার??